
ঢাকা থেকে অপহৃত ৯ বছরের নাবালিকা মেয়েকে চট্টগ্রাম থেকে বিমানপথে দুবাই পাচারের পরিকল্পনা, তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতারসহ ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৭,চট্টগ্রাম।
অপহৃত ভিকটিম ০৯ বছর বয়সের এবং ঢাকা মহানগরীর মিরপুর এলাকায় ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া একজন ছাত্রী।কিছুদিন পূর্বে দুবাই প্রবাসী মোঃ শহিদুল করিম এর সাথে ভিকটিমের বড় বোনের বিয়ে হয়।
পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার জানতে পারে,শহিদুল বাংলাদেশ থেকে দুবাই নারী পাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত।শহিদুল ভিকটিমের বোনকে বিয়ের নামে দুবাই নিয়ে গেলেও দুবাই নাইট লাইফের কাছে তাকে বিক্রি করে অন্য দেশে থাকতে শুরু করে।কিন্তু ওই পাচারের পরপরই সে ভিকটিমকেও বিদেশ পাচার করার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে।গত ৩ জানুয়ারি সকাল নয়টায় ভিকটিম মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়।
দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও ভিকটিম বাড়ি ফিরে না আসায় ভিকটিমের মা এবং তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখোঁজি করেন।অনেক খোঁজাখোঁজি করার পর এক সময় ভিকটিমের পরিবার জানতে পারেন আসামী শহিদুল এবং তার সহযোগী সাকিব এবং নুরুজ্জামানের সহায়তায় ভিকটিমকে বিদেশ পাচারের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদি হয়ে ৩ জনকে আসামী করে ঢাকা মহানগরীর শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ২৩ তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ, জিআর নং ২৩, তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ, ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০২০ (সংশোধিত ২০২৩) এর ৭/৩০।
র্যাব-৭,চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত ও আশ্রয়দাতা ২ জন আসামী চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন চৌধুরীপাড়া এলাকার একটি বাসায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭,চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ২৮শে জানুয়ারি দুপুর ২টায় হাটহাজারীর ফরহাদাবাদের মৃত তোফায়েল আহমেদের ছেলে আবু সুফিয়ান রানা(৩১) ও আবু সুফিয়ানের স্ত্রী শারমিন কাওসার হান্নান(২২)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আটককৃত আসামীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় ৩নং আসামী হাটহাজারী চিপাতলী এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে নুরুজ্জামান(৫৫)কে ভোর সাড়ে পাঁচটায় হাটহাজারীর চিপাতলী এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী নুরুজ্জামানকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এবং তার দেওয়া তথ্য মতে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানামীন নলুয়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে ২৮শে জানুয়ারি সকাল আটটায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,তারা অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্যদের সহায়তায় অসহায় মেয়েদের বিভিন্নভাবে ভালো চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে দুবাই পাচার করত। নাবালিকা শিশু ভিকটিমকে অপহরণ করে তারা দুবাই পাচার করার জন্য চট্টগ্রাম ও আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখেছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।