ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা সারাদেশে নিষিদ্ধ হলেও উপজেলা সন্দ্বীপে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে ‘নাম্বার প্লেট’ বানিজ্যের মাধ্যমে।

সারাদেশে অটোরিকশা অবৈধ কিন্তু সন্দ্বীপে অবৈধ অটোরিকশা চলছে।প্রতিনিয়তই ঘটছে দূর্ঘটনা।কিন্তু অবৈধ অটোরিকশার বন্ধে কেউ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।উল্টো বৈধতা দিতে নাম্বার প্লেট সিস্টেম চালু করা হয়েছে।ফলে অটোরিকশার পরিমান বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিন হাজার।যেখানে গেলো বছর অটোরিকশা ছিলো দেড় হাজার।
গতবছর উপজেলার এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো বিছিন্ন উপজেলা সন্দ্বীপের কথা চিন্তা করে,জনগণের সুবিধার কথা মাথায় নতুন কোন অটো রিকশা ঢুকতে দেওয়া হবে না,যেগুলো আছে সেগুলোই চলবে।সেই বৈঠকে সন্দ্বীপের সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা,উপজেলা নির্বাহী অফিসার,এসিল্যান্ড সহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।কথা ছিলো আর কোন অটো রিকশা সন্দ্বীপ ঢুকলে থানা ব্যবস্থা নিবে।কিন্তু এই বছর সাড়ে তিন হাজারে দাঁড়িয়েছে অটোরিকশা।
অটো রিকশা সন্দ্বীপ চলে চালক মালিক সমিতির নামে।চাঁদাবাজির একটা সুন্দর কৌশল।এজন্যই ইউনিয়ন ভিত্তিক গড়ে তোলা হয়েছে চালক-মালিক সমিতি।চালক মালিক সমিতি মাসিক ফি নেয় অটোরিকশা থেকে।এইভাবেই সারাদেশে অবৈধ অটোরিকশা সন্দ্বীপে বৈধতা পায়।সমিতির নেতারা উপরের ইশারায় অটো চালক-মালিকদের বৈধতা দিচ্ছেন,নিরাপত্তা দিচ্ছেন নাম্বার প্লেট দিয়ে।
নাম্বার প্লেট আছে এমন কয়েকজন অটোরিকশা চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নাম্বার প্লেটের জন্য প্রথমে ৩০০ টাকা ও পরে প্রতিমাসে ৩০০ টাকা দিতে হয়।টাকা না দিলে রাস্তায় গাড়ি চালাতে সমস্যা।প্লেট না থাকলে হয়রানি করে। গাড়ি আটক করে।তখন আরও অনেক ঝামেলা।
গত বছরের ২০শে জুন অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা নিষিদ্ধ করতে সন্দ্বীপ উপজেলা মাঠে মানববন্ধন কর্মসূচি করেন সিএনজি চালক-মালিক সমিতির সদস্যরা।তখনই সিদ্ধান্ত হয় নতুন কোন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা সন্দ্বীপ ঢুকতে দেওয়া হবে না উল্টো দেড় হাজার গতি বছরের হিসাব অনুযায়ী সেগুলো প্রধান সড়কে চলাচল করতে পারবে না।কিন্তু এই বছর ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিন হাজারে।
এদিকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সাধারণ রিকশা ও সিএনজি চালকদের ভাড়া পেতে সমস্যা হচ্ছে।কমে গেছে তাদের যাত্রী।কারণ হিসাবে বলা যায়,সিএনজি চলে অকটেন অথবা প্রেট্রোল দিয়ে যার লিটার ১৩৫টাকা কিন্তু ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার জন্য লাগে শুধুমাত্র চার্জ,তাও আবার বেশির ভাগই চোরা বৈদ্যুতিক মিটার দিয়ে চার্জ দেওয়া হচ্ছে।সেজন্য রিকশা ও সিএনজির ভাড়া কমে গেছে বলে তাদের দাবি।
এইসব অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আমদানি করছে ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক স্বার্থলোভী নেতারা।বেশিরভাগই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অনায়াসে সন্দ্বীপ ঢুকচ্ছে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা গুলো।
ধারণা করা হচ্ছে উপজেলা সন্দ্বীপে বিদ্যুৎ এর লোকসান হচ্ছে এই ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে।যেখানে কিনা পুরো সন্দ্বীপে এখনো বিদ্যুৎ এখনো দেওয়া শেষ হয়নি সেখানে বিদ্যুৎ চুরি করে,চোরাই মিটার দিয়ে বেশিরভাগ অটোরিকশা গুলো চার্জ দিতে হয়।
এছাড়া বেশিরভাগ এক্সিডেন্টের জন্য দায়ী এই ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও লাইসেন্স বিহীন মোটরসাইকেল।মোটরসাইকেল চালাচ্ছে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকরা আর ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চলছে অতিরিক্ত গতিতে যার ফলে বার বার এক্সিডেন্টের মুখোমুখি হচ্ছে সাধারণ পথচারী।
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধে সন্দ্বীপ থানার অফিসার্স ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম বলেন,আমরা প্রায় অভিযান চালিয়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আটক করি এবং আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।প্রতিটি ঘাটে বলা আছে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা সন্দ্বীপ ঢুকতে পারে না।
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধের বিষয়ে সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সম্রাট খীসা বলেন,উপজেলা প্রশাসন প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছে,মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমান অভিযান করে আমরা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আটক করি।
আগামী পর্বে উপজেলা সন্দ্বীপে যারা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আমদানি করেন তাদের নাম,ঠিকানা ও রাজনৈতিক পরিচয়সহ তুলে ধরা হবে।