প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১৩, ২০২৫, ৬:৩৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ৫, ২০২২, ৭:১৪ অপরাহ্ণ
সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ,দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি,নিহত বেড়ে ৪৯
সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোয় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন।দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি চার শতাধিক।তাদের মধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন।চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াস চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসনের তথ্য কেন্দ্র সূত্র ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।প্রশাসনের একটি চার্টে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ২০০ জন।নিহতদের মধ্যে আটজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রয়েছেন।এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ২০ জনসহ দুই শতাধিক লোক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
চমেক হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ আসছে।কোনো অ্যাম্বুলেন্সে দুটি,আবার কোনো অ্যাম্বুলেন্সে চারটি পর্যন্ত মরদেহ আনতে দেখা গেছে।মরদেহ আসা অব্যাহত রয়েছে।তাই নিহত সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ(চমেক)হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন,‘লাশগুলো হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। সকাল ৯টার পর যে লাশগুলো আনা হয়েছে,সেগুলো চেনার উপায় নেই।পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ টেস্ট করা লাগতে পারে।’
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক(ডিজি)ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন,আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মী নিহত হয়েছেন,আহত হয়েছেন ২১ জন।আহতরা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন।কয়েকজন কর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অগ্নিকাণ্ডে নিহত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীর মধ্যে একজনের নাম মনিরুজ্জামান(৩২)।অন্যদের নাম জানা যায়নি।নিহতদের মধ্যে আরও চার জনের নাম জানা গেছে।তারা হলেন মোমিনুল হক,মহিউদ্দিন,হাবিবুর রহমান ও রবিউল আলম।
এদিকে আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।এ অবস্থায় অভিযানে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল।আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এসে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন,‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা,আগুন যাতে আর ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য সেনাবাহিনীর ১৫০ থেকে ২০০ সদস্য অভিযানে অংশ নেবেন।ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।জেলা প্রশাসনের উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানান,কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে হতাহতদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো, তা এখনো জানা যায়নি বলে জানান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন।তিনি বলেন,ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যের একটি কমিটি করা হবে।কমিটিকে চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হবে।
ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের উপপরিচালক আনিসুর রহমানে বলেন,কনটেইনার ডিপোটিতে হাইড্রোজেন পারক্সাইড নামে বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল রয়েছে।তবে ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটল,তা এখনো জানা যায়নি।আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।কিন্তু কাছাকাছি যাওয়া যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ পরপর ভেতর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ আসছে।
ইপেপার